বন্যায় ৩৬ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২৩৪ কিলোমিটার সড়ক
দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
আপলোড সময় :
১৬-১০-২০২৪ ০৮:০৭:৩৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৬-১০-২০২৪ ০৮:০৭:৩৪ অপরাহ্ন
দেশে সাম্প্রতিক সময়ে পর পর ৪ দফা বন্যায় ৩৬টি জেলার ২৩১টি সড়কের ১২৩৪ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এরমধ্যে পানিতে নিমজ্জিত হওয়া, পিচ উঠে যাওয়া, মাটি বা সড়কের স্তর সরে যাওয়া সমস্যাগুলোর তাৎক্ষণিক সমাধান করা হয়েছে। তবে যেসব জায়গায় বড় ধরনের ভাঙ্গন কিংবা ক্ষতি হয়েছে সেসব জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) ব্র্যাকের আয়োজনে বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসন ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে সম্পৃক্ত সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণে একটি বহুপক্ষীয় মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ উইংয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জিকরুল হাসান। জিকরুল হাসান বলেন, আমাদের একটি সামাজিক সমস্যা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, রাস্তার পাশেই উঁচু করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে পানি প্রবাহের আউটলেটগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রাস্তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার জন্য এটি একটি বিরাট সমস্যা। খালগুলো ভরাট করা হচ্ছে। ফলে যখনই বৃষ্টি হচ্ছে পানি রাস্তার ওপরেই রয়ে যাচ্ছে। সড়কে ছোটখাটো যেসব ক্ষত, সেগুলো আমাদের আঙ্গিকেই সমাধান করতে পারছি। কিন্তু বড় ক্ষতিগুলোর জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন।
এবারের বন্যায় ক্ষতি কমাতে তাৎক্ষণিকভাবে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সড়কে যেন পানি জমে না থাকে সেজন্য পানি নামিয়ে দিতে ড্রেন করা, বালুর বস্তা ফেলাসহ বেশ কিছু কাজ ওয়াসার সঙ্গে সমন্বয় করে করা হয়েছে। বিশেষ করে এবারের বন্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রুট খুব ঝুঁকির মধ্যে ছিল। অনেক সময় দেখা যায় রাস্তার পাশের জমা পানিতে অনেক ঢেউ হয়। যার কারণে বাঁধ ভেঙে যায়। সেগুলোকে আমরা চিহ্নিত করেছি। এখন থেকে রাস্তা তৈরি করার সময় জলবায়ুজনিত পরিবর্তন এবং দুর্যোগ ঝুঁকিসহ সবকিছু বিবেচনায় নেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
এই প্রকৌশলী আরও বলেন, প্রতি ৪ বছর পর পর একটি রাস্তার সংস্কার প্রয়োজন। এর জন্য যে বরাদ্দ সেগুলো আমরা পেয়েছি। কিন্তু বন্যায় যে ক্ষতি হয়েছে তার জন্য এই বরাদ্দ অপ্রতুল। সেজন্য ছোট ক্ষতিগুলো নিয়মিত বরাদ্দ থেকেই সংস্কার করা সম্ভব হবে। কিন্তু বড় ক্ষতিগুলোর সংস্কারের জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় সাম্প্রতিক সময়ে বন্যা কবলিত ২টি বিভাগের ১১টি জেলার জন্য এলজিইডির কিছু প্রস্তাবও তুলে ধরা হয়। সেখানে চট্টগ্রাম, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী,কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের রাস্তা, সেতু ও কালভার্ট পুনর্বাসনের মাধ্যমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক নেটওয়ার্ক পুনরুদ্ধার বা পুনঃস্থাপন করার বিষয়টি উঠে আসে।
অপরদিকে মতবিনিময় সভার আয়োজকরা বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশকে দুটি প্রলয়ঙ্করী বন্যার মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে অবকাঠামো, কৃষি, জীবিকা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও স্যানিটেশন খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে আপৎকালীন সহায়তা পর্ব শেষ হয়েছে। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করার এখনই সময়, এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই বহুপক্ষীয় মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে বন্যার মতো দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে পুনর্বাসন ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রমের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাব্য সমাধান এবং এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সংশ্লিষ্টরা।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ফারুক ই আজম। সভাটি সঞ্চালনা করেন ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ এতে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন।
সভায় বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসক এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানসমূহের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dinajpur TV
কমেন্ট বক্স