ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুড়ে সব শেষ! এ বাড়িতে এসেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টওপুড়ে

পুড়ে সব শেষ! এ বাড়িতে এসেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টওপুড়ে

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
আপলোড সময় : ০৯-০৮-২০২৪ ০৩:১৭:০০ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১২-১০-২০২৪ ১১:৪৬:৫১ অপরাহ্ন
পুড়ে সব শেষ! এ বাড়িতে এসেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টওপুড়ে
আমি ও আমার স্ত্রী দুজনই পুরোনো মানুষ, পুরোনো বাড়ি, পুরোনো বৃক্ষ, পুরোনো সংস্কৃতিকে খুব ভালোবাসি। পুরোনো সবকিছুই আমাদের টানে। সেই ভেবে পুরোনো বাড়ির সন্ধান করতে করতেই এই বাড়িটা পেয়ে যাওয়া।

 গেল বছর প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছিলেন জনপ্রিয় গানের দল ‘জলের গান’–এর রাহুল আনন্দ। সে সময় ১৪০ বছরের পুরোনো যে ভাঙা বাড়িটায় রাহুল ছিলেন, হঠাৎ আলোচনায় এসেছিল সেটি। কেননা এর কিছুদিন আগে এই বাড়িতে অতিথি হয়ে এসেছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ।

 গান–আড্ডায় বেশ কেটেছিল দিনটি। সেদিন ছিল ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩। রোববার। সেদিন ছিল আনন্দের, উৎসবের।
বছর ঘুরতে না ঘুরতে সেই ৩২ নম্বর বাড়িটি আবার আলোচনায়। এবার বেদনার, হতাশার। লজ্জার। গত সোমবার ৫ আগস্ট এ বাড়িতে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। হিংসার আগুন জ্বলে এ বাড়িতে, তাণ্ডব চলে। রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে বাদ্যযন্ত্র, আসবাব—সবকিছু ভেঙে ফেলা হয়েছে। ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়। ঘর থেকে লেপ-তোশকও নিয়ে যেতে দেখা যায়।

 এসিও খুলে নিয়ে যায় লুটপাটকারীরা।মন খারাপ করা সে পোস্টে লেখা হয়, জলের গানের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের এ বাড়িটি শুধু রাহুল আনন্দের বসতবাড়ি ছিল না; ছিল পুরো দলটির স্বপ্নধাম, আনন্দপুর। যেখানে তৈরি হয়েছে কত গান, কত সুর আর দাদার ভাবনাপ্রসূত শত শত বাদ্যযন্ত্র। শুধু তা–ই নয়, জলের গানের অফিশিয়াল স্টুডিও হিসেবেও ব্যবহৃত হত বাড়িটি। দলের সবার দলগত সংগীতচর্চা থেকে শুরু করে, সব স্টুডিও ওয়ার্ক—রেকর্ডিং, মিক্সিং, এডিটিং এখানেই হতো। যাঁরা নিয়মিত এই বাড়িতে যাতায়াত করতেন, তাঁরা জানেন যে রাহুল আনন্দ ও উর্মিলা শুক্লার বাড়িটির সাদা গেটটি সব সময় খোলাই থাকত।

রাহুল আনন্দের বাড়িতে হামলা, মেনেই নিতে পারছেন না অর্ণব
২০২৩ সালের সেপ্টম্বরে হালফ্যাশন প্রতিবেদক ফ্লোরিডা শুভ্রা রোজারিও আমার কাছে বাড়ি মানে আশ্রয় আর প্রশ্রয়: রাহুল আনন্দ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ বাড়ির বর্ণনায় লেখা হয় এমনপুরোনো বাড়ির গা ঘেঁষে নানান গাছপালা ঘিরে আছে, সেখানে পাখির কিচিরমিচির শোনা যায়। লম্বা বারান্দায় ঝুলছে সলতে দেওয়া কুপিবাতি, হারিকেন, পুরোনো চিঠির বাক্স, গাছ, কিংবা নানা চিত্রকর্ম।

 একতলা বাড়ির বারান্দার আরেক কোণে সাজানো পিতল আর কাঠের তৈরি নানা শৈল্পিক সামগ্রী। ঝুলছে দোতারাও। একটা ভিনটেজ আমেজ আছে এ বাড়িটায়।ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের এ বাড়িটার বয়স এখন ১৪০ বছরেরও বেশি। সাক্ষাৎকারে রাহুল আনন্দ বলেছিলেন, তিনি আদর করে এই বাড়ির নাম দিয়েছেনভাঙা বাড়ি।

 কিন্তু তাঁর এই ভাঙা বাড়িতেই আট বছর ধরে আছেন সবাই। রাহুল-শুক্লা দম্পতি ও তাঁদের একমাত্র ছেলে তোতা ছাড়াও এ বাড়িতে আরও অনেকের বাস। পোষা কুকুর ও বিড়ালের সঙ্গে প্রতিবেশী পোষ্যরাও এখানে সসম্মানে থেকে যায়।

একতলা হলেও অনেকটা জায়গাজুড়ে তৈরি হয়েছে এই বাড়ি। অনেকগুলো ঘর। একেকটার আমেজ একেক রকম। শহরের বিশাল বিশাল অট্টালিকার চাকচিক্যের সঙ্গে এই বাড়ির তুলনা করলে কিছুটা ভুল হবে।

 আসলে মিলবেও না। পুরোনো হলেও শিল্পী দম্পতি এই ভাঙা বাড়িকে প্রাণ দিয়েছিলেন বেশ যত্ন করে। সে সময় রাহুল আনন্দের ভাষ্যেআমি ও আমার স্ত্রী দুজনই পুরোনো মানুষ, পুরোনো বাড়ি, পুরোনো বৃক্ষ, পুরোনো সংস্কৃতিকে খুব ভালোবাসি। পুরোনো সবকিছুই আমাদের টানে। সেই ভেবে পুরোনো বাড়ির সন্ধান করতে করতেই এ বাড়িটা পেয়ে যাওয়া।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর হোল্ডিংয়েই এ বাড়ি। একই হোল্ডিংয়ে বেশ কিছু স্থাপনা। এই অংশের বাড়িটা পরিত্যক্ত ছিল বলে বাড়ির মালিক কাউকে এই বাড়িটা ভাড়াও দিচ্ছিলেন না। কিন্তু মালিকের এটাও বিশ্বাস হয়েছিল, ‘শিল্পী মানুষ, হয়তো বাড়িটায় প্রাণ ফিরবে, সুন্দর কিছু হবে।

 আসলে হয়েছেও তা-ই। একটা বসবাস-অযোগ্য বাড়িকে সেবা-শুশ্রূষা আর পরম ভালোবাসা দিয়ে থাকার উপযোগী করে তুলেছেন তাঁরা। দেড় মাসের মতো সময় লাগে সব ময়লা-জঞ্জাল পরিষ্কার করে বাড়িটায় উঠতে।

হ্যালো প্রফেসর ইউনূস...

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dinajpur TV

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ