শেরপুরে পরীক্ষামূলকভাবে কপি চাষ শুরু
দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
আপলোড সময় :
১৭-০৮-২০২৪ ০৫:১৩:১৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১৭-০৮-২০২৪ ০৫:১৩:১৭ অপরাহ্ন
শেরপুর, ২৯ জুলাই, ২০২৪ (বাসস) : নালিতাবাড়ী উপজেলায় কফি চাষ করে লাভবানের সম্ভবনা দেখছে কৃষকরা। ফলন ও বাণিজ্যিক পথ সুগম হলে সুসময়ের দুয়ার খুলে যাবে এ অঞ্চলের কৃষকদের। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা এসে চারা নিয়ে যাচ্ছেন বিনামূল্যে।
কৃষি অফিস জানায়, পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির কফি থাকলেও বাণিজ্যিকভাবে দুই রকমের কফির চাষ রয়েছে। এ এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য “এরাবিকা” ও “রোবাস্টা” জাতের কফি চাষ শুরু হয়েছে। রোবাস্টা জাতের কফি বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকায় চাষের উপযোগী।
কফির চারাগুলো দেখতে কিছুটা দেবদারু চারার মতো। মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রতিটি পরিপক্ব গাছে ফুল ধরা শুরু হয়। মে থেকে জুন মাসের মধ্যে ফুল থেকে গুটি গুটি ফলে পরিণত হয়। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ফল পরিপক্বতা লাভ করে। পরে এগুলো রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। বাজারজাত ও কফি পান করার জন্য উপযোগী করতে মেশিনের মাধ্যমে কফিবীজ গুঁড়া করে নিতে হয়। আবার কফির বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা যায় ।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গাছ প্রতি ৫-৭ কেজি কফি পাওয়া যাবে। প্রতি কেজি কফির দাম ৮০-১০০ টাকা। এবং প্রতি একরে ২৫০- ৩০০টি গাছ লাগানো যায়। বছরে ২০০ কফি গাছ থেকে এক হাজার ৬০০ কেজি পর্যন্ত কফি ফলন পাওয়া যায়। যার ন্যূনতম বাজারমূল্য ১ লাখ ৬০ টাকা।
কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ বান্দর বনে চাকুরির সুবাদে রুমা উপজেলার ডার্জিলিং পাড়ায় কফি চাষ প্রথমেত তার নজরে আসে। সেখান থেকেই কফি চাষ নিয়ে গবেষণা শুরু করেন কৃষিবিদ সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ। ২০২১ সালে লাল লিয়াং বং এর বাগান হতে ৫ কেজি কফি কিনে চারা উৎপাদন করেন।
সেই চারা পরীক্ষামুলক হালুয়াঘাট,ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় এবং বান্দর বানের কিছু চাষিদের মধ্যে বিতরণ করেন। সেই চারা গুলো থেকে পরিপুর্ণ ভাবে এখন ফল দেওয়া শুরু করেছে। ওই সব কফি সংগ্রহ করে অল্প কিছু ফল নিজস্ব মেশিনে রোস্টিং করে বাজার জাত করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে কৃষি চাষ সম্প্রসারণ ও বাণিজ্যিক করনের লক্ষ্যে এ অঞ্চলে গারো পাহাড়ে প্রচুর অব্যহৃত জমিকে চাষের আওতায় আনতে আগামী দুই বছরে প্রায় দুই লাখ চারা বিনামুল্যে দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ চারা দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬-৭ হাজার চারা বিতরণ করা হয়েছে। এ চারা গুলো আগামী দুই বছরের মাথায় ফল দেওয়া শুরু করবে।
এরমধ্যে কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চারা রোপণ ও পরিচর্যা বিষয়ে অবহিত করা হচ্ছে। বাড়ীর যে কোন বাগানে সাথী ফসল হিসেবে ছায়া যুক্ত জায়গায় চাষ করে বাড়তি আয় করার সুযোগ রয়েছে। উৎপাদিত কফি বিক্রি করার জন্য কৃষকদের কোথাও যেতে হবে না কারন সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ ন্যয্য মূল্যে কফি চেরি নিজেই কিনে নিবেন।
তিনি আশা করছেন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করবেন।
রামচন্দ্রকুড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন বলেন, দুই বছর আগে আমি ৫৪ টা চারা লাগিয়েছিলাম। এ বছর ৫০ টা গাছে ফল ধরেছে। আমি আরো চারা লাগানোর জন্য প্রস্ততি নিচ্ছি।
শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ বিভাগের উপ-পরিচারক ডঃ সুকল্প দাস জানান, জেলায় পাহাড়ি এলাকায় আমরা কিছু পরীক্ষমূলক ভাবে কফি চাষ শুরু করেছি এজন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dinajpur TV
কমেন্ট বক্স