ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে সুইডেনের রাজপরিবারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হলো

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
আপলোড সময় : ২২-০৯-২০২৪ ০২:৫৯:১৫ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১২-১০-২০২৪ ০৮:৩০:৩০ অপরাহ্ন
যেভাবে সুইডেনের রাজপরিবারের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হলো
জাতীয় পর্যায়ের একজন বিজয়ী হিসেবে ২০২৪ সালের স্টকহোম জুনিয়র ওয়াটার প্রাইজ প্রতিযোগিতার মূল পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পাই। 

নাম শুনেই নিশ্চয় অনুমান করতে পারছেন, আসরটি বসেছিল সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে। প্রতিযোগিতা উপলক্ষে গত ২৩ আগস্ট স্টকহোম পৌঁছাই। পরদিন স্বাগত বক্তব্য ও ভেন্যু পরিদর্শনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।

২৫ ও ২৬ তারিখ ছিল শহর ঘুরে দেখা ও প্রকল্প উপস্থাপনের দিন। আমাদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। একটি দল প্রকল্প উপস্থাপন করবে, অন্য দল শহর ঘুরবে। এভাবে চলে পালাক্রমে দুই দিন। প্রথম দিন আমি ছিলাম ‘ঘোরাঘুরি’র দলে। এই দিন আমাদের সুইডেনের বিভিন্ন স্থাপনা, যেমন রয়েল প্যালেস, পার্লামেন্ট, স্পটিফাইয়ের প্রধান কার্যালয় ও নোবেল প্রাইজ মিউজিয়ামে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৬ আগস্ট আসে প্রকল্প উপস্থাপনের পালা। আমার প্রকল্পটি ছিল ‘হাই ভোল্টেজ প্লাজমা ওয়াটার পিউরিফায়ার ফ্রম ইলেকট্রনিক ওয়েস্ট’। শিল্পক্ষেত্রে ‘টেক্সটাইল ডাই’ অপসারণে এটি কার্যকর। বন্যাকবলিত এলাকায় সাশ্রয়ী মূল্যের পানি পরিশোধন যন্ত্র হিসেবেও এটি উপযোগী। বিচারকেরা আমাকে বৈজ্ঞানিক খুঁটিনাটি, সমাজের ওপর এই প্রকল্পের প্রভাব ও কার্যকারিতা–সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন করেন। তিনটি আলাদা বিচারক কমিটির মাধ্যমে তিন দফায় বিচারকার্যটি সম্পন্ন হয়।

পরদিন আন্তর্জাতিক পানি গবেষণা প্রতিষ্ঠান জাইলেমে শিক্ষাভ্রমণে যাই। সেখান থেকে পানি পরিশোধনের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়। যে বিষয় আমার কাছে বেশি চমকপ্রদ লেগেছে, তা হলো সুইডেনে যেকোনো কলের পানিই পানের উপযোগী।বিকেলেই ছিল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি ছিলেন সুইডেনের যুবরাজ্ঞী ভিক্টোরিয়া। প্রতিযোগিতায় আন্তর্জাতিক স্টকহোম জুনিয়র ওয়াটার প্রাইজ জিতে নেয় যুক্তরাজ্য। মেক্সিকো পায় ডিপ্লোমা অব এক্সিলেন্স পুরস্কার। আর ব্রাজিল পায় পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ড। এই প্রতিযোগিতায় আমার অর্জন? ফাইনালিস্ট হিসেবে ডিপ্লোমা সনদ। তবে যুবরাজ্ঞীর সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময়ের অভিজ্ঞতাও বড় পাওয়া। জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসংকট সমাধানে তরুণদের উদ্যোগ নিতে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি।

 এরপর আমরা সুইডেনের প্রাচীনতম ওপেন এয়ার জাদুঘর স্ক্যানসেন পরিদর্শন করি। সুইডিশদের প্রাচীন জীবনযাত্রা সম্পর্কে জেনেও বেশ অবাক হয়েছি। স্ক্যান্ডিনেভিয়ানরা বহু আগে থেকেই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খাদ্য সংরক্ষণ করত। সেচকাজ, গবাদিপশু পালন ইত্যাদিতে ছিল আধুনিকতার ছোঁয়া। পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ছিল উন্নত।২৮ আগস্ট স্টকহোম সিটি হলে আমাদের জন্য নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। কয়েকজন নোবেল বিজয়ী ও রাজপরিবারের সদস্যও এতে অংশ নেন। বেহালা ও পিয়ানোর সুর পরিবেশটাই বদলে দিচ্ছিল।এটি শুধু এক রাজকীয় অনুষ্ঠানই নয়; বরং তরুণ বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেওয়ারও এক মঞ্চ। রাজা কার্ল গুস্তাফ ও রানি সিলভিয়া আমাদের উদ্ভাবন ও প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। পৃথিবীর পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায়ও উৎসাহিত করেন তাঁরা।

পরদিন ছিল বিদায়ের পালা। বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে স্টকহোম ছাড়ি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dinajpur TV

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ