দেশে প্রতিবছর ভুট্টা উৎপাদন বাড়ছে। গত ছয় বছরে স্থানীয়ভাবে পণ্যটির উৎপাদন প্রায় ৪৬ দশমিক ৫০ শতাংশ বা প্রায় দেড় গুণ বেড়েছে। এর বিপরীতে বিদেশ থেকে ভুট্টা আমদানি কমেছে তিন গুণ বা সাড়ে ৬৫ শতাংশ। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভ ও আবাদ পদ্ধতি সহজ হওয়ার কারণে কৃষকেরা দিন দিন ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন।
সরকারি সংস্থা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুসারে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে প্রায় ৫ লাখ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়, ফলন পাওয়া যায় প্রায় ৪৭ লাখ টন। ছয় বছর পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভুট্টা উৎপাদন বেড়ে ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার টন ছাড়িয়ে যায়। এ সময়ে আবাদি জমির পরিমাণ ২৬ শতাংশ বেড়ে হয় ৬ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশে ভুট্টার বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭০ লাখ টন। বর্তমানে চাহিদার বেশির ভাগই স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ হচ্ছে; বাকি অংশ আমদানি করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ১৩ লাখ ২৩ হাজার টন ভুট্টা আমদানি হয়েছিল, যা সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কমে ৪ লাখ ৫৬ হাজার টনে নেমে এসেছে। দেশে ফলন বাড়ায় ভুট্টা আমদানি ব্যাপকভাবে কমেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ক্রপস উইংয়ের উপপরিচালক শারমীন আখতার প্রথম আলোকে বলেন, গমের মতো ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে লাভ বেশি হয়, এতে কম পরিচর্যা লাগে, যেকোনো উঁচু জায়গায় চাষ করা যায়, ফলন বেশি হয় এবং মাড়াই প্রক্রিয়াও বেশ সহজ। এ ছাড়া একই জমিতে সাথি ফসলও চাষ করা যায়। মূলত এসব সুবিধার কারণেই কৃষকেরা ভুট্টা চাষে এখন বেশি আগ্রহী।
আবাদ বেশি উত্তরাঞ্চলে
দেশে ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ ১০ জেলা হচ্ছে দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, রংপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, ঝিনাইদহ, জামালপুর ও গাইবান্ধা। অর্থাৎ দেশের উত্তরাঞ্চলেই ভুট্টা চাষ হয় বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে দিনাজপুর। এই জেলায় ২০২৩-২৪ মৌসুমে প্রায় ৯ লাখ ৯০ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চুয়াডাঙ্গায় ভুট্টার ফলন হয়েছে ৫ লাখ ৭৮ হাজার টন। তবে বরিশালসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভুট্টা উৎপাদনের পরিমাণ খুবই সামান্য। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত দেশে রবি বা শীত মৌসুমে ভুট্টা চাষ বেশি হয়। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে কৃষকেরা ভুট্টার বীজ রোপণ করেন; মার্চ-এপ্রিলে সেই ভুট্টা মাড়াই করা হয়। রবি মৌসুমে বেশি চাষের কারণ হলো, এ সময় আবহাওয়া ও জমি উপযোগী থাকে এবং সাথি ফসলও চাষ করা যায়। অবশ্য খরিফ মৌসুমেও ভুট্টা চাষ হয়, তবে এ সময় ফলন কম পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদক সম্প্রতি দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও চুয়াডাঙ্গার ছয়জন কৃষকের সঙ্গে কথা বলেন।
তাঁরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে খরচ হয় ১০-১৫ হাজার টাকা। জমি ইজারা নেওয়া বা অন্যান্য কারণে এ ব্যয় কিছুটা কমবেশি হতে পারে। সাধারণত এক বিঘা জমিতে ৩৫-৫০ মণ ভুট্টা উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত প্রতি মণ ভুট্টা কৃষকেরা ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা দরে (কেজি ৩২-৩৫ টাকা) বিক্রি করেন। এতে বিঘাপ্রতি তাঁদের ৩০-৩৫ হাজার টাকা বা তারও বেশি লাভ থাকে। চুয়াডাঙ্গা সদরের সুবদিয়া গ্রামের ভুট্টাচাষি মো. তানভীর ফরহাদ বলেন, ‘আমি গত মৌসুমে পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করি। জমি প্রস্তুত করাসহ সব মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। মৌসুম শেষে মোট ২০৫ মণ ভুট্টা পাই। এগুলো বিক্রি করে আয় হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার টাকা।’দিনাজপুরের আড়তদার মো. মহির উদ্দিন প্রায় দেড় যুগ ধরে ভুট্টার ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, ‘ভুট্টার ব্যবসায়ে লাভ মোটামুটি ভালো। স্থানীয় বেশির ভাগ কৃষকই এখন গমের পরিবর্তে ভুট্টা চাষ করছেন। ফলে আমাদের ব্যবসায়ও প্রধান পণ্য হয়ে গেছে ভুট্টা। আগে গম বিক্রি করতাম।’
বর্তমানে অনেক কৃষক ভুট্টার সঙ্গে সাথি ফসলেরও চাষ করছেন। কৃষকেরা জানান, নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে মাঠ থেকে আলু সংগ্রহ শুরু হয়। এর ২০-২৫ দিন আগে ওই জমিতেই ভুট্টার বীজ রোপণ করা হয়। আলুর জন্য আগেই জমিতে সার দেওয়া থাকায় ভুট্টা চাষে সার কম লাগে। আবার ভুট্টার বীজ রোপণের সময় অনেকে লালশাক, মুলা বা ফুলকপির মতো সবজির বীজও রোপণ করেন। ভুট্টার চারা মোটামুটি বড় হতে হতে এসব সবজি তুলে ফেলা যায়। এভাবে অনেকেই অধিক লাভবান হচ্ছেন। ফিডের দামে প্রভাব নেই ভুট্টার বড় ক্রেতা প্রাণিখাদ্য উৎপাদনকারী (ফিড প্রডিউসার) কোম্পানিগুলো। বেশি ভুট্টা উৎপাদন হয় এমন এলাকাগুলোতে এসব কোম্পানির নিজস্ব সংগ্রহকেন্দ্র রয়েছে। এতে তারা কৃষকের কাছ থেকে অনেক কম দামে ভুট্টা কিনতে পারছে। যদিও কম দামে কেনার প্রভাবটা ভুট্টা থেকে তৈরি প্রাণিখাদ্যের দামে দেখা যায় না।
মুরগির খাদ্য (ফিড) উৎপাদনকারী ডায়মন্ড এগ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কায়সার আহমেদ বলেন, ‘ভুট্টার চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ দেশীয় উৎপাদন থেকে পূরণ হয়, বাকিটা আমদানি হয়। দেশে পোলট্রি খাদ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। যেহেতু আমাদের জমি কম, সেহেতু আমদানি নির্ভরতা থাকবেই। দেশে ভুট্টার উৎপাদন বাড়লে দাম স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে, অর্থাৎ সুদের হার, পরিষেবা ব্যয় ও অন্যান্য খরচ বাড়তি থাকায় ভুট্টা উৎপাদন বাড়লেও ফিডের দাম কমবে, তা বলা কঠিন।’
উচ্চ ফলনশীল ভুট্টার জাত ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিডব্লিউএমআরআই)। প্রতিষ্ঠানটির ভুট্টা প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সালাহ্উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার ফলন বেশি পাওয়া যায়। তাপমাত্রা বাড়লেও ভুট্টার উৎপাদনে সমস্যা হয় না। অন্যদিকে চাহিদা থাকায় গত কয়েক বছর ধরে কৃষকেরা ভুট্টার ভালো দাম পাচ্ছেন। এতে প্রতিবছর আরও বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ করছেন তাঁরা।
সালাহ্উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বাজারে অনেক ভেজাল বীজ আসছে। এতে ভুট্টার উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই ভেজাল বীজ বিক্রি বন্ধে সরকারি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
সরকারি সংস্থা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুসারে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে প্রায় ৫ লাখ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়, ফলন পাওয়া যায় প্রায় ৪৭ লাখ টন। ছয় বছর পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভুট্টা উৎপাদন বেড়ে ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার টন ছাড়িয়ে যায়। এ সময়ে আবাদি জমির পরিমাণ ২৬ শতাংশ বেড়ে হয় ৬ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশে ভুট্টার বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭০ লাখ টন। বর্তমানে চাহিদার বেশির ভাগই স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ হচ্ছে; বাকি অংশ আমদানি করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ১৩ লাখ ২৩ হাজার টন ভুট্টা আমদানি হয়েছিল, যা সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কমে ৪ লাখ ৫৬ হাজার টনে নেমে এসেছে। দেশে ফলন বাড়ায় ভুট্টা আমদানি ব্যাপকভাবে কমেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ক্রপস উইংয়ের উপপরিচালক শারমীন আখতার প্রথম আলোকে বলেন, গমের মতো ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে লাভ বেশি হয়, এতে কম পরিচর্যা লাগে, যেকোনো উঁচু জায়গায় চাষ করা যায়, ফলন বেশি হয় এবং মাড়াই প্রক্রিয়াও বেশ সহজ। এ ছাড়া একই জমিতে সাথি ফসলও চাষ করা যায়। মূলত এসব সুবিধার কারণেই কৃষকেরা ভুট্টা চাষে এখন বেশি আগ্রহী।
আবাদ বেশি উত্তরাঞ্চলে
দেশে ভুট্টা উৎপাদনে শীর্ষ ১০ জেলা হচ্ছে দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, রংপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, ঝিনাইদহ, জামালপুর ও গাইবান্ধা। অর্থাৎ দেশের উত্তরাঞ্চলেই ভুট্টা চাষ হয় বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে দিনাজপুর। এই জেলায় ২০২৩-২৪ মৌসুমে প্রায় ৯ লাখ ৯০ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চুয়াডাঙ্গায় ভুট্টার ফলন হয়েছে ৫ লাখ ৭৮ হাজার টন। তবে বরিশালসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভুট্টা উৎপাদনের পরিমাণ খুবই সামান্য। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সাধারণত দেশে রবি বা শীত মৌসুমে ভুট্টা চাষ বেশি হয়। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে কৃষকেরা ভুট্টার বীজ রোপণ করেন; মার্চ-এপ্রিলে সেই ভুট্টা মাড়াই করা হয়। রবি মৌসুমে বেশি চাষের কারণ হলো, এ সময় আবহাওয়া ও জমি উপযোগী থাকে এবং সাথি ফসলও চাষ করা যায়। অবশ্য খরিফ মৌসুমেও ভুট্টা চাষ হয়, তবে এ সময় ফলন কম পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদক সম্প্রতি দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও চুয়াডাঙ্গার ছয়জন কৃষকের সঙ্গে কথা বলেন।
তাঁরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে খরচ হয় ১০-১৫ হাজার টাকা। জমি ইজারা নেওয়া বা অন্যান্য কারণে এ ব্যয় কিছুটা কমবেশি হতে পারে। সাধারণত এক বিঘা জমিতে ৩৫-৫০ মণ ভুট্টা উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত প্রতি মণ ভুট্টা কৃষকেরা ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা দরে (কেজি ৩২-৩৫ টাকা) বিক্রি করেন। এতে বিঘাপ্রতি তাঁদের ৩০-৩৫ হাজার টাকা বা তারও বেশি লাভ থাকে। চুয়াডাঙ্গা সদরের সুবদিয়া গ্রামের ভুট্টাচাষি মো. তানভীর ফরহাদ বলেন, ‘আমি গত মৌসুমে পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করি। জমি প্রস্তুত করাসহ সব মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। মৌসুম শেষে মোট ২০৫ মণ ভুট্টা পাই। এগুলো বিক্রি করে আয় হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার টাকা।’দিনাজপুরের আড়তদার মো. মহির উদ্দিন প্রায় দেড় যুগ ধরে ভুট্টার ব্যবসা করছেন। তিনি বলেন, ‘ভুট্টার ব্যবসায়ে লাভ মোটামুটি ভালো। স্থানীয় বেশির ভাগ কৃষকই এখন গমের পরিবর্তে ভুট্টা চাষ করছেন। ফলে আমাদের ব্যবসায়ও প্রধান পণ্য হয়ে গেছে ভুট্টা। আগে গম বিক্রি করতাম।’
বর্তমানে অনেক কৃষক ভুট্টার সঙ্গে সাথি ফসলেরও চাষ করছেন। কৃষকেরা জানান, নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে মাঠ থেকে আলু সংগ্রহ শুরু হয়। এর ২০-২৫ দিন আগে ওই জমিতেই ভুট্টার বীজ রোপণ করা হয়। আলুর জন্য আগেই জমিতে সার দেওয়া থাকায় ভুট্টা চাষে সার কম লাগে। আবার ভুট্টার বীজ রোপণের সময় অনেকে লালশাক, মুলা বা ফুলকপির মতো সবজির বীজও রোপণ করেন। ভুট্টার চারা মোটামুটি বড় হতে হতে এসব সবজি তুলে ফেলা যায়। এভাবে অনেকেই অধিক লাভবান হচ্ছেন। ফিডের দামে প্রভাব নেই ভুট্টার বড় ক্রেতা প্রাণিখাদ্য উৎপাদনকারী (ফিড প্রডিউসার) কোম্পানিগুলো। বেশি ভুট্টা উৎপাদন হয় এমন এলাকাগুলোতে এসব কোম্পানির নিজস্ব সংগ্রহকেন্দ্র রয়েছে। এতে তারা কৃষকের কাছ থেকে অনেক কম দামে ভুট্টা কিনতে পারছে। যদিও কম দামে কেনার প্রভাবটা ভুট্টা থেকে তৈরি প্রাণিখাদ্যের দামে দেখা যায় না।
মুরগির খাদ্য (ফিড) উৎপাদনকারী ডায়মন্ড এগ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কায়সার আহমেদ বলেন, ‘ভুট্টার চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ দেশীয় উৎপাদন থেকে পূরণ হয়, বাকিটা আমদানি হয়। দেশে পোলট্রি খাদ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। যেহেতু আমাদের জমি কম, সেহেতু আমদানি নির্ভরতা থাকবেই। দেশে ভুট্টার উৎপাদন বাড়লে দাম স্থিতিশীল থাকতে পারে। তবে বর্তমানে যে পরিস্থিতি চলছে, অর্থাৎ সুদের হার, পরিষেবা ব্যয় ও অন্যান্য খরচ বাড়তি থাকায় ভুট্টা উৎপাদন বাড়লেও ফিডের দাম কমবে, তা বলা কঠিন।’
উচ্চ ফলনশীল ভুট্টার জাত ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিডব্লিউএমআরআই)। প্রতিষ্ঠানটির ভুট্টা প্রজনন বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সালাহ্উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার ফলন বেশি পাওয়া যায়। তাপমাত্রা বাড়লেও ভুট্টার উৎপাদনে সমস্যা হয় না। অন্যদিকে চাহিদা থাকায় গত কয়েক বছর ধরে কৃষকেরা ভুট্টার ভালো দাম পাচ্ছেন। এতে প্রতিবছর আরও বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ করছেন তাঁরা।
সালাহ্উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বাজারে অনেক ভেজাল বীজ আসছে। এতে ভুট্টার উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই ভেজাল বীজ বিক্রি বন্ধে সরকারি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।