নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে খাল-বিল, নালা-ডোবা, ধানি জমি, বদ্ধ ও মুক্ত জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে বংশবিস্তার এবং বেড়ে ওঠা কুঁচিয়া যাচ্ছে বিদেশে। উপজেলার জলাশয়ে শতাধিক শিকারি চোঙা বা ওকার ফাঁদ পেতে বিশেষ পদ্ধতিতে প্রতিদিন প্রায় ৫০০-৬০০ কেজি কুঁচিয়া শিকার করছেন। প্রতি মাসে প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকা আয় করছেন তারা।
উপজেলার তারাব পৌর এলাকার মাসাবতে রয়েছে কুঁচিয়া বিক্রির মিনি আড়ত। প্রতিদিন ঢাকা থেকে পাইকাররা এসে এখানকার কুঁচিয়া শিকারিদের কাছ থেকে এগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। হাতবদল হয়ে আড়তদার, পাইকার সেখান থেকে রপ্তানিকারকদের মাধ্যমে এ কুঁচিয়া চলে যাচ্ছে বিদেশে। কুঁচিয়া শিকার করেই সংসার চলাচ্ছেন এখানকার শতাধিক পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুঁচিয়া স্থানভেদে কুচে বাইম, কুঁচে মাছ, কুইচ্চা নামে পরিচিত। এর ত্বক মসৃণ, পিচ্ছিল ও আঁশহীন। দেহ গাঢ় বাদামি রঙের। এটি ৬০-৭০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। তবে এটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু।
এর আছে ওষুধি গুণ। দেশে কুঁচিয়া খাওয়ার তেমন প্রচলন না থাকলেও বিদেশে প্রচুর চাহিদা আছে। প্রতিদিন সারাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ কুঁচিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, চীন ও জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
কুঁচিয়া শিকারি, পাইকার ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় তারা নিজেদের জমিতে কৃষিকাজ করে সংসারের খরচ জোগাতেন। লোকসানের মুখে পড়ে কৃষিকাজ ছেড়ে চলে এসেছেন রূপগঞ্জে। এখানে কোনো কাজে সুবিধা করতে না পেরে নেমে পড়েছেন বিচিত্র পেশায়।
এখানকার বেশিরভাগ মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েন। প্রায় শতাধিক পরিবার এটি শিকার ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
শিকারিরা উপজেলার কর্ণগোপ, বংশীনগর, নগাঁও, শান্তিনগর, ভুলতা, ভায়েলা, পাড়াগাঁও, মিয়াবাড়ি, হাটাব, আমলাব, কালী, বাড়ৈপাড়, পাঁচাইখা, গোলাকান্দাইল ও কায়েতপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়ে এ মাছ ধরছেন। প্রতিদিন বিকেলে একেকজন শিকারি ১০০-১৫০টি চোঙা বা ওকায় কেঁচো গেঁথে জলাশয়ের পাড়, খাল-বিল, ডোবা, ধানি জমিসহ অল্প গভীরে ফাঁদ পাতেন। একজন শিকারি প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ কেজি কুঁচিয়া মাছ ধরতে পারেন।
প্রতি কেজি ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। একজন শিকারি প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। সে হিসেবে উপজেলার প্রায় শতাধিক শিকারি মাসে আয় করেন ৫০-৬০ লাখ টাকা। প্রতিদিন ঢাকা থেকে পাইকাররা এসে তারাব পৌরসভার মাসাব এলাকার মিনি আড়ত থেকে এগুলো নিয়ে যান। অনেক শিকারি একটু বেশি লাভের আশায় রাজধানীর উত্তরা হাউজ বিল্ডিং ও কোনাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার আড়তগুলোতে বিক্রি করেন। এভাবে হাতবদল হয়ে রপ্তানির মাধ্যমে চলে যায় বিদেশে।
উপজেলার বংশীনগর এলাকায় দেখা হয় স্বপন বিশ্বাসের সঙ্গে। কাঁধে অনেকগুলো চোঙা নিয়ে ছুটছেন কুঁচিয়া শিকারের জন্য। তিনি জানান, গ্রামে কৃষিকাজ করে তেমন আয় রোজগার হতো না। অভাব-অনটনেই দিন কাটতো। একদিন সনাতন সরকার বলেন, রূপগঞ্জে তার কুঁচিয়ার আড়ত আছে। এখানে কুঁচিয়া শিকারে ভালো আয় করা যায়। তারপর তার সাথে এখানে চলে আসেন তিনি। এখন এ মাছ বিক্রি করে সংসার খরচ শেষে আয়ও করতে পারছেন।
কুঁচিয়া শিকারী শাহাদাৎ হোসেন ও সুবেদ আলী জানান, তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রা এলাকায়। দীর্ঘদিন রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করে কুঁচিয়া শিকার করে আসছেন। প্রতিদিন ১০০-১৫০টি চোঙা পেতে ৫-৬ কেজি কুঁচিয়া ধরা যায়। এগুলো বিক্রি করে দেড়-দুই হাজার টাকা রোজগার করা যায়।
তারা জানান, ওই এলাকার অনেক লোক এখানে এসে এ পেশাকে বেঁছে নিয়েছেন। আয়-রোজগার ভালো বিধায় হবিগঞ্জের জাকির হাসেন, রমজান, মাজু, উহাদ আলী, কাশেম, ময়মনসিংহের দুলাল, বাবুল ও দ্বীন ইসলামসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক লোক এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
আড়তের মালিক সনাতন সরকার বলেন, ‘আমার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলায়। কর্মসংস্থান না থাকায় কাজের সন্ধানে কয়েক বছর আগে এখানে চলে আসি। এ পেশায় জড়িয়ে পড়ি।
৫০-৬০ জন শিকারি আমার আড়তে এ মাছ বিক্রি করেন। এ ছাড়া অনেকে ঢাকার বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করেন। রূপগঞ্জে প্রায় শতাধিক কুঁচিয়া শিকারি এ পেশার মাধ্যমে সংসার চালাচ্ছেন।
রাজধানীর পাইকার দিলিপ বিশ্বাস জানান, তাদের ১১ জনের একটি গ্রুপ আছে। তারা রূপগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের জেলা ও দেশের বিভিন্ন জায়গার আড়তদার এবং শিকারিদের কাছ থেকে কুঁচিয়া সংগ্রহ করেন।
সেগুলো ঢাকার উত্তরার কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেন। প্রতি মাসে তারা ৬০-৮০ মেট্রিক টন কুঁচিয়া রপ্তানিকারকদের কাছে সরবরাহ করেন।
উপজেলার তারাব পৌর এলাকার মাসাবতে রয়েছে কুঁচিয়া বিক্রির মিনি আড়ত। প্রতিদিন ঢাকা থেকে পাইকাররা এসে এখানকার কুঁচিয়া শিকারিদের কাছ থেকে এগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। হাতবদল হয়ে আড়তদার, পাইকার সেখান থেকে রপ্তানিকারকদের মাধ্যমে এ কুঁচিয়া চলে যাচ্ছে বিদেশে। কুঁচিয়া শিকার করেই সংসার চলাচ্ছেন এখানকার শতাধিক পরিবার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুঁচিয়া স্থানভেদে কুচে বাইম, কুঁচে মাছ, কুইচ্চা নামে পরিচিত। এর ত্বক মসৃণ, পিচ্ছিল ও আঁশহীন। দেহ গাঢ় বাদামি রঙের। এটি ৬০-৭০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। তবে এটি পুষ্টিকর ও সুস্বাদু।
এর আছে ওষুধি গুণ। দেশে কুঁচিয়া খাওয়ার তেমন প্রচলন না থাকলেও বিদেশে প্রচুর চাহিদা আছে। প্রতিদিন সারাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ কুঁচিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, চীন ও জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
কুঁচিয়া শিকারি, পাইকার ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় তারা নিজেদের জমিতে কৃষিকাজ করে সংসারের খরচ জোগাতেন। লোকসানের মুখে পড়ে কৃষিকাজ ছেড়ে চলে এসেছেন রূপগঞ্জে। এখানে কোনো কাজে সুবিধা করতে না পেরে নেমে পড়েছেন বিচিত্র পেশায়।
এখানকার বেশিরভাগ মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসে এ পেশায় জড়িয়ে পড়েন। প্রায় শতাধিক পরিবার এটি শিকার ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
শিকারিরা উপজেলার কর্ণগোপ, বংশীনগর, নগাঁও, শান্তিনগর, ভুলতা, ভায়েলা, পাড়াগাঁও, মিয়াবাড়ি, হাটাব, আমলাব, কালী, বাড়ৈপাড়, পাঁচাইখা, গোলাকান্দাইল ও কায়েতপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়ে এ মাছ ধরছেন। প্রতিদিন বিকেলে একেকজন শিকারি ১০০-১৫০টি চোঙা বা ওকায় কেঁচো গেঁথে জলাশয়ের পাড়, খাল-বিল, ডোবা, ধানি জমিসহ অল্প গভীরে ফাঁদ পাতেন। একজন শিকারি প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ কেজি কুঁচিয়া মাছ ধরতে পারেন।
প্রতি কেজি ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। একজন শিকারি প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। সে হিসেবে উপজেলার প্রায় শতাধিক শিকারি মাসে আয় করেন ৫০-৬০ লাখ টাকা। প্রতিদিন ঢাকা থেকে পাইকাররা এসে তারাব পৌরসভার মাসাব এলাকার মিনি আড়ত থেকে এগুলো নিয়ে যান। অনেক শিকারি একটু বেশি লাভের আশায় রাজধানীর উত্তরা হাউজ বিল্ডিং ও কোনাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার আড়তগুলোতে বিক্রি করেন। এভাবে হাতবদল হয়ে রপ্তানির মাধ্যমে চলে যায় বিদেশে।
উপজেলার বংশীনগর এলাকায় দেখা হয় স্বপন বিশ্বাসের সঙ্গে। কাঁধে অনেকগুলো চোঙা নিয়ে ছুটছেন কুঁচিয়া শিকারের জন্য। তিনি জানান, গ্রামে কৃষিকাজ করে তেমন আয় রোজগার হতো না। অভাব-অনটনেই দিন কাটতো। একদিন সনাতন সরকার বলেন, রূপগঞ্জে তার কুঁচিয়ার আড়ত আছে। এখানে কুঁচিয়া শিকারে ভালো আয় করা যায়। তারপর তার সাথে এখানে চলে আসেন তিনি। এখন এ মাছ বিক্রি করে সংসার খরচ শেষে আয়ও করতে পারছেন।
কুঁচিয়া শিকারী শাহাদাৎ হোসেন ও সুবেদ আলী জানান, তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রা এলাকায়। দীর্ঘদিন রূপগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করে কুঁচিয়া শিকার করে আসছেন। প্রতিদিন ১০০-১৫০টি চোঙা পেতে ৫-৬ কেজি কুঁচিয়া ধরা যায়। এগুলো বিক্রি করে দেড়-দুই হাজার টাকা রোজগার করা যায়।
তারা জানান, ওই এলাকার অনেক লোক এখানে এসে এ পেশাকে বেঁছে নিয়েছেন। আয়-রোজগার ভালো বিধায় হবিগঞ্জের জাকির হাসেন, রমজান, মাজু, উহাদ আলী, কাশেম, ময়মনসিংহের দুলাল, বাবুল ও দ্বীন ইসলামসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক লোক এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
আড়তের মালিক সনাতন সরকার বলেন, ‘আমার বাড়ি হবিগঞ্জ জেলায়। কর্মসংস্থান না থাকায় কাজের সন্ধানে কয়েক বছর আগে এখানে চলে আসি। এ পেশায় জড়িয়ে পড়ি।
৫০-৬০ জন শিকারি আমার আড়তে এ মাছ বিক্রি করেন। এ ছাড়া অনেকে ঢাকার বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করেন। রূপগঞ্জে প্রায় শতাধিক কুঁচিয়া শিকারি এ পেশার মাধ্যমে সংসার চালাচ্ছেন।
রাজধানীর পাইকার দিলিপ বিশ্বাস জানান, তাদের ১১ জনের একটি গ্রুপ আছে। তারা রূপগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের জেলা ও দেশের বিভিন্ন জায়গার আড়তদার এবং শিকারিদের কাছ থেকে কুঁচিয়া সংগ্রহ করেন।
সেগুলো ঢাকার উত্তরার কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেন। প্রতি মাসে তারা ৬০-৮০ মেট্রিক টন কুঁচিয়া রপ্তানিকারকদের কাছে সরবরাহ করেন।