ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের আটটি জেলা উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিপাতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে। প্রবল বেগে কহুয়া, মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের স্থল দিয়ে পানি প্রবেশ করছে। ফলে প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক জনপদ।
বাংলাদেশে সাধারণত সংঘটিত বন্যাগুলো হলো—মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবে বর্ষাকালীন বন্যা, পাহাড়ি ঢলের ফলে আকস্মিক বন্যা, অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে বন্যা এবং ঝড় সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস বা জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে বন্যা।
মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবে নদনদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার জন্য বর্ষাকালীন বন্যায় নদনদীর পানি সমতলে আস্তে আস্তে বাড়ে বা কমে। বাংলাদেশের উত্তরের কিছু এলাকা, উত্তরপূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বাংশে সংলগ্ন পাহাড়ি অঞ্চলে ভারি বর্ষণের জন্য আকস্মিক বন্যা হয়ে থাকে এবং সমতলে পানি দ্রুত বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়। একইসঙ্গে পানিপ্রবাহের গতিবেগ বেশি হয়। বন্যা সাধারণত স্বল্পমেয়াদি হয়ে থাকে। কোনো কোনো এলাকা অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা বা নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ার জন্য মাঝারি বা ভারি বর্ষণের কারণে বন্যা কবলিত হয়, এই ধরনের বন্যাকবলিত এলাকার পানি সমতলে খুব ধীরগতিতে কমে এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়। ঝড়-ঘূর্ণিঝড়-সাইক্লোন ইত্যাদির জন্য তৈরি হয় জলোচ্ছ্বাস এবং উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারের উচ্চতার কারণে বন্যা হয়ে থাকে। এক বা একাধিক ধরনের বন্যা বাংলাদেশের কোনো কোনো এলাকায় দেখা দিতে পারে।
বন্যার জন্য সৃষ্ট পানি মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তোলার পাশাপাশি নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিও ঘটায়। বন্যার সময়ে সুস্থ থাকতে এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।পানিবাহিত রোগ খাবার পানির উৎসগুলোকে বন্যার দূষিত পানি দূষিত ও সংক্রমিত করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্যানিটারি টয়লেটগুলোও। প্রাণঘাতী টাইফয়েড, কলেরা, হেপাটাইটিস রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু দূষিত পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। পানিবাহিত রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব বাড়ে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার গ্রহণ, অপরিষ্কার হাত বা নোংরা প্লেট, জীবাণুবাহক পোকামাকড় ও মশা-মাছির কারণে ।
অস্বাস্থ্যকর পানি ও খাবার
বিভিন্ন ধরনের ময়লা, মানব ও প্রাণিজ বর্জ্য এবং খামার ও শিল্প এলাকার রাসায়নিকগুলো বন্যার পানিতে মিশে যায়। ফলে কৃষিজমিগুলোয় খাদ্যশস্য নষ্ট হয়ে যায়। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হিমায়িত সঞ্চিত খাদ্যও।
মশা, প্রাণী ও সাপের প্রকোপ
আর্দ্র অঞ্চল এবং আবদ্ধ জলাশয়ের সৃষ্টি হয় দীর্ঘায়িত বৃষ্টিপাত এবং বন্যার কারণে, যা কাজ করে মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে । এতে বেড়ে যায় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের সংখ্যা। বন্যার পানিতে নিজেদের আবাসস্থল থেকে সাপ খোলাখুলি বাইরে আসতে বাধ্য হয়। শুকনো জায়গার সন্ধানে সাপগুলো তখন মানুষের কাছাকাছি চলে আসে। ফলে বন্যার পরে বেড়ে যায় সাপে কামড়ানোর ঘটনা। এ ছাড়া ইঁদুর, বন্যপ্রাণী ইত্যাদির জন্য ঝুঁকি থাকে বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণের।
বন্যার পানিতে ডুবে মৃত্যু
পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বন্যার সময়ে। অসাবধানতার কারণে এক্ষেত্রে শিশুরাই বেশি ভুক্তভোগী হয়।
ফাঙ্গাসের সংক্রমণ
বন্যার আর্দ্র আবহাওয়ায় বংশবিস্তার ঘটে ফাঙ্গাসের। ফলে, অ্যালার্জি এবং হাঁপানিতে আক্রান্তদের বেড়ে যায় শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগের মাত্রা। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সংক্রমণ যেমন– দাউদ, খোস-পাঁচড়া, চুলকানিসহ নানা ধরনের চর্মরোগের বিস্তার ঘটতে পারে ময়লা পানিতে নেমে, দৈনন্দিনের প্রয়োজনীয় কাজ করতে গিয়ে।
অপুষ্টি
বানভাসি জনগণ বিশেষত দরিদ্র পরিবারের শিশুরা দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টির মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে নিরাপদ পানীয় জলের অভাব এবং স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবারের স্বল্পতার জন্য।
এছাড়াও সবাই সাধারণত যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর এবং সম্পত্তির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মেরামতে বেশি মনোযোগী ও ব্যস্ত হয়ে পড়ে, যা ভুক্তভোগীদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশে সাধারণত সংঘটিত বন্যাগুলো হলো—মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবে বর্ষাকালীন বন্যা, পাহাড়ি ঢলের ফলে আকস্মিক বন্যা, অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে বন্যা এবং ঝড় সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস বা জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে বন্যা।
মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবে নদনদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার জন্য বর্ষাকালীন বন্যায় নদনদীর পানি সমতলে আস্তে আস্তে বাড়ে বা কমে। বাংলাদেশের উত্তরের কিছু এলাকা, উত্তরপূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্বাংশে সংলগ্ন পাহাড়ি অঞ্চলে ভারি বর্ষণের জন্য আকস্মিক বন্যা হয়ে থাকে এবং সমতলে পানি দ্রুত বৃদ্ধি বা হ্রাস পায়। একইসঙ্গে পানিপ্রবাহের গতিবেগ বেশি হয়। বন্যা সাধারণত স্বল্পমেয়াদি হয়ে থাকে। কোনো কোনো এলাকা অপর্যাপ্ত নিষ্কাশন ব্যবস্থা বা নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ার জন্য মাঝারি বা ভারি বর্ষণের কারণে বন্যা কবলিত হয়, এই ধরনের বন্যাকবলিত এলাকার পানি সমতলে খুব ধীরগতিতে কমে এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়। ঝড়-ঘূর্ণিঝড়-সাইক্লোন ইত্যাদির জন্য তৈরি হয় জলোচ্ছ্বাস এবং উপকূলীয় অঞ্চলে জোয়ারের উচ্চতার কারণে বন্যা হয়ে থাকে। এক বা একাধিক ধরনের বন্যা বাংলাদেশের কোনো কোনো এলাকায় দেখা দিতে পারে।
বন্যার জন্য সৃষ্ট পানি মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তোলার পাশাপাশি নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিও ঘটায়। বন্যার সময়ে সুস্থ থাকতে এসব স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।পানিবাহিত রোগ খাবার পানির উৎসগুলোকে বন্যার দূষিত পানি দূষিত ও সংক্রমিত করে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্যানিটারি টয়লেটগুলোও। প্রাণঘাতী টাইফয়েড, কলেরা, হেপাটাইটিস রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু দূষিত পানিতে ছড়িয়ে পড়ে। পানিবাহিত রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব বাড়ে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার গ্রহণ, অপরিষ্কার হাত বা নোংরা প্লেট, জীবাণুবাহক পোকামাকড় ও মশা-মাছির কারণে ।
অস্বাস্থ্যকর পানি ও খাবার
বিভিন্ন ধরনের ময়লা, মানব ও প্রাণিজ বর্জ্য এবং খামার ও শিল্প এলাকার রাসায়নিকগুলো বন্যার পানিতে মিশে যায়। ফলে কৃষিজমিগুলোয় খাদ্যশস্য নষ্ট হয়ে যায়। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হিমায়িত সঞ্চিত খাদ্যও।
মশা, প্রাণী ও সাপের প্রকোপ
আর্দ্র অঞ্চল এবং আবদ্ধ জলাশয়ের সৃষ্টি হয় দীর্ঘায়িত বৃষ্টিপাত এবং বন্যার কারণে, যা কাজ করে মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসাবে । এতে বেড়ে যায় ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের সংখ্যা। বন্যার পানিতে নিজেদের আবাসস্থল থেকে সাপ খোলাখুলি বাইরে আসতে বাধ্য হয়। শুকনো জায়গার সন্ধানে সাপগুলো তখন মানুষের কাছাকাছি চলে আসে। ফলে বন্যার পরে বেড়ে যায় সাপে কামড়ানোর ঘটনা। এ ছাড়া ইঁদুর, বন্যপ্রাণী ইত্যাদির জন্য ঝুঁকি থাকে বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণের।
বন্যার পানিতে ডুবে মৃত্যু
পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বন্যার সময়ে। অসাবধানতার কারণে এক্ষেত্রে শিশুরাই বেশি ভুক্তভোগী হয়।
ফাঙ্গাসের সংক্রমণ
বন্যার আর্দ্র আবহাওয়ায় বংশবিস্তার ঘটে ফাঙ্গাসের। ফলে, অ্যালার্জি এবং হাঁপানিতে আক্রান্তদের বেড়ে যায় শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগের মাত্রা। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সংক্রমণ যেমন– দাউদ, খোস-পাঁচড়া, চুলকানিসহ নানা ধরনের চর্মরোগের বিস্তার ঘটতে পারে ময়লা পানিতে নেমে, দৈনন্দিনের প্রয়োজনীয় কাজ করতে গিয়ে।
অপুষ্টি
বানভাসি জনগণ বিশেষত দরিদ্র পরিবারের শিশুরা দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টির মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে নিরাপদ পানীয় জলের অভাব এবং স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবারের স্বল্পতার জন্য।
এছাড়াও সবাই সাধারণত যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর এবং সম্পত্তির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মেরামতে বেশি মনোযোগী ও ব্যস্ত হয়ে পড়ে, যা ভুক্তভোগীদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়।